Header Ads

Header ADS

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবি: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২, তিনজন জন বাদে ২৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।




প্রকাশঃ সোমবার , ২৯ জুন ২০২০ ইং
ডেস্করিপোর্টঃ- 
রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে সোমবার (২৯জুন) সকাল ৯ টার দিকে প্রায় অর্ধশত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন বাদে ২৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।এছাড়া আরো অনেক নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। সহযোগিতায় র‌্যাব ও বিমানবাহিনীর দু’টি হেলিকপ্টার রয়েছে।
জানা যায়, সোমবার সকাল ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসছিলো এমভি মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ। লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাটের কাছাকাছি শ্যামবাজার বরাবর ফরাশগঞ্জ পৌঁছালে একই সময় চাঁদপুর থেকে ঢাকায় আসছিল ময়ূরী-২ নামের আরেকটি লঞ্চ। এসময় মুহূর্তের মধ্যেই ময়ূরী-২ লঞ্চটি মর্নিং বার্ড লঞ্চটির ওপর উঠে যায়। এতে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি দুমড়ে-মুচড়ে প্রায় ৫০ ফুট পানির নিচে চলে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। উদ্ধার কাজে ডুবুরি দল নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে ওপরে উঠে গেছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার কাজে নিয়োজিতরা।

উদ্ধার হওয়া নিহতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন। সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে তিনি এমন তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ২৯ জন হলেন- মারুফা (২৫) ও তার শিশুপুত্র তাহা (২), তারা চকবাজার থানার সোয়ারিঘাট এলাকার বাসিন্দা, সত্যরঞ্জন (৫৫), সিপন (২৫), গোলাম হোসেন ভূঁইয়া (৩৫), শিপলু (২২), সুমনা বেগম (৩৫), সুফিয়া বেগম (৬০), গোলাপ হোসেন (৫০), মনিরুজ্জামান (৪৫), আফজাল হোসেন (৪৪), আবু তাহের ৪৫,রাজধানীর ইসলামপুরের যমুনা ব্যাক কর্মকর্তা সুমন তালুকদার (৩২), একই এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী মনির হোসেন (৫০), বিউটি বেগম (৩৮), আবু তাহের (৫০), শাহাদাত (৩৫), ময়না (৩৮) ও তার ছেলে সাজিদ (১২) এবং মেয়ে মুক্তা (১৪); মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকার বাদামতলীতে ফল কিনতে আসা ব্যবসায়ী আবু সাঈদ
(৪৫), সুবর্না আক্তার (৩৫),শাহাদাত হোসেন (৪০), হাফেজা খাতুন (৩৮), সদিুল (৩৪), আমির হোসেন (৫৫), মাহিম (১৭), দিদার ও (৪৫) হোসেন।

মজিবর সিকদার (৩৮) নামে বেঁচে যাওয়া লঞ্চ যাত্রী জানান, লঞ্চের মধ্যে প্রায় ১৫০ জনের মতো লোক ছিল। তিনি নানা বাড়ি কাঠপট্টি থেকে নিজ বাড়ি রাজধানীর পুরান ঢাকার ফরিদাবাদ ব্যাংক কলোনিতে আসছিলেন। তিনি বলেন, ‘ঘাটে আসার আগ মুহূর্তে ময়ূরী-২ ইচ্ছাকৃতভাবে মর্নিং বার্ড লঞ্চটির ওপর উঠিয়ে দেয়।’

বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান কমান্ডোর গোলাম সাদেককে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করবে বলে জানা গেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এটা কোন দুর্ঘটনা হতে পারে না, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নৌপুলিশ কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে সদরঘাটের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে।’

মন্ত্রী  অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘উৎসুক জনতা উদ্ধার কাজে বাধাগ্রস্ত করছে।’ নিহতের প্রতিটি পরিবারকে দেড় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

No comments

Theme images by suprun. Powered by Blogger.